আইএমএফের ঋণ এর পেছনের কারন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্ভবত সবচেয়ে অজনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান। দেশে দেশে এখনো আইএমএফের ঋণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়, এমনকি অনেক সরকারও সহজে যেতে চান না আইএমএফের কাছে। সেই আইএমএফের কাছে এবার ঋণ চেয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। চিঠিতে ঋণের পরিমাণের কথা উল্লেখ করা নেই। তবে বাংলাদেশ আশা করছে, সাড়ে ৪ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। মূলত লেনদেনের ভারসাম্য ঘাটতি মেটাতে এবং বাজেটসহায়তা হিসেবে ঋণ চেয়েছে। করা বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এর মধ্যে রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ট্রাস্ট কর্মসূচির আওতায় ১ বিলিয়ন ডলার বা ১০০ কোটি ডলারও রয়েছে।
বিপদে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানসহ বাংলাদেশও আইএমএফের ঋণ পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশর অর্থনীতি মোটেই শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনীয় নয়। তাদের মতো মহাবিপদেও বাংলাদেশ নেই। দেউলিয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কা, আর পাকিস্তানও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে আছে।
বাংলাদেশ সর্বশেষ আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়েছিল ২০১২ সালে। সম্প্রসারিত ঋণ কর্মসূচির (ইসিএফ) আওতায় তিন বছরের জন্য নেওয়া হয়েছিল ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সে সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। আর চলতি হিসাবে এবং সামগ্রিক লেনদেনের ভারসাম্যেও ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বা ৯৩০ কোটি ডলার। এই রিজার্ভ দিয়ে ২ দশমিক ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেত। সে সময় বাংলাদেশ সংকটে পড়েছিল মূলত আমদানির ক্ষেত্রে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করতে হয়েছিল। দেশের মধ্যেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সরকার। এতেই মূল্যস্ফীতি বাড়ে। এখান থেকে উদ্ধার পেতেই আইএমএফের কাছে যায় সরকার। তারপরও বাংলাদেশকে কেন আইএমএফের ঋণ নিতে হচ্ছে—সে প্রশ্ন অনেকেরই।