শেয়ারবাজারের লভ্যাংশ

সাধারণত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের দুই ধরনের লভ্যাংশ দেয়। এক ধরনের লভ্যাংশ হচ্ছে বোনাস শেয়ার, যেটি শেয়ারবাজারে স্টক ডিভিডেন্ড হিসেবে পরিচিত। আরেকটি হচ্ছে নগদ লভ্যাংশ, অর্থাৎ নগদ টাকা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো বছর শেষে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করে থাকে। তবে কিছু কিছু কোম্পানি অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন মূলত মুনাফা বা লাভের আশায়। এ মুনাফা বা লাভ তাঁরা দুভাবে পান। প্রথমত শেয়ারের দাম বাড়লে তাতে বিনিয়োগ করা শেয়ার বিক্রি করে মূলধনি মুনাফা পান। দ্বিতীয়ত মুনাফা পান বছর শেষে ঘোষিত লভ্যাংশ থেকে। যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘ মেয়াদে কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা বছর শেষে লভ্যাংশ প্রাপ্তির মুনাফা হিসাব কষেন।

 

 

মূলধন মুনাফা আর বছর শেষে লভ্যাংশ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা—এ দুইয়ে মিলিয়ে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের শেয়ারে বিনিয়োগের লাভ-লোকসান ঘুরপাক খায়। বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশই বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফার হিসাব কষেন, শেয়ারের দাম কতটা বাড়ল তার ওপর ভিত্তি করে। তাঁদের কাছে লভ্যাংশের বিবেচনাটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। আরেক দল বিনিয়োগকারী আছেন, তাঁরা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করেন, মুনাফার হিসাব কষেন বছর শেষের লভ্যাংশের ভিত্তিতে।

শেয়ারবাজারের কোম্পানিগুলো বছর শেষে যে লভ্যাংশ দেয়, তার মধ্যে দেশের বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীর কাছে পছন্দের লভ্যাংশ হচ্ছে বোনাস বা স্টক লভ্যাংশ।

বাংলাদেশে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয় পুরোপুরি করমুক্ত। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে যে মুনাফা করেন, সেটি করমুক্ত। কিন্তু নগদ লভ্যাংশের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত মুনাফা সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর আয় হিসেবে যুক্ত হয়। তাতে বছর শেষে যদি ওই বিনিয়োগকারীর আয় করমুক্ত সীমার বেশি হয়, তাহলে তাঁকে বাড়তি কর দিতে হয়। এ করহার সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। একইভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নগদ লভ্যাংশ হিসেবে যে আয় করেন, তাতে করহার বেশি।