ডলার ব্যাংকের ধার করার খরচও বাড়িয়ে দিচ্ছে

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আরএফ হোসেন বলছেন, গত কয়েক মাস ধরেই তারল্য কমছে ব্যাংক খাতে।

মহামারীর ধাক্কা সামলে ওঠার পথে ঋণ প্রবাহ বাড়লেও আমানত সেভাবে বাড়েনি, এর মধ্যে ডলারের বাজারের অস্থিরতা সামলাতে গিয়ে নগদ টাকার সংকটে পড়ছে কোনো কোনো ব্যাংক; যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে।

ডলারের দাম বাবদ বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা এই সময়ে ব্যাংকগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে। সেই ডলার দিয়ে ব্যাংক গ্রাহকের আমদানি বিল পরিশোধ করেছে।

কিন্তু গ্রাহক সাধারণত তাৎক্ষণিকভাবে ওই ডলারের দাম শোধ করেন না। আমদানি বিলের বিপরীতে ব্যাংকে একটি ঋণ তৈরি করা হয়, যা গ্রাহক পরে শোধ করেন।

ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে এক দিনের জন্য ধার করা অর্থের সুদের গড় হার বা কলমানি রেট জুলাইয়ের শেষে এসে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশে উঠেছে। অথচ এক বছর আগে তা ছিল ২ শতাংশ; গত ডিসেম্বরে ছিল ৩ শতাংশের ঘরে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের জুন শেষে দেশে ব্যাংক খাতে তারল্যের (নগদ টাকা ও অন্যান্য ইন্সট্রুমেন্ট মিলিয়ে) পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৪৯ হাজার কোটি টাকা, এ বছর মে মাস শেষে তা কমে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা হয়েছে।

এর মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ (অতিরিক্ত তারল্য) গত বছরের জুনের শেষে ছিল ৬২ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এ বছর মে মাস শেষে তা কমে ২১ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা হয়েছে।

আমানতের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক প্রতিবেদন বলছে, গত মে শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অথচ গত বছরের মে মাসে তা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল।

অন্যদিকে গত জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, আর সার্বিক ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশ।