সুদহার থাকা এবং নাথাকা নিয়ে বিতর্ক বাংলাদেশে

মূল্যস্ফীতি নিয়ে চাপে আছে প্রায় সব দেশ। তারা মুদ্রা সরবরাহ কমাতে সুদহার বাড়ানোর ওপরই মূলত ভরসা করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সুদের হার কয়েক দফা বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক বাড়াচ্ছে একটু ধীরগতিতে। বড় অর্থনীতির মধ্যে কেবল জাপানই শূন্য সুদের হার বজায় রেখেছে। আর ৮০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে সুদের হার কমিয়েছে তুরস্ক।

মুদ্রা সরবরাহ কমাতে সুদহার বাড়ানোর ওপরই মূলত ভরসা। সুদের হারে পরিবর্তন আনতে চায় না বাংলাদেশ।

বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য ডলারের দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে বেড়েছে খাদ্য, ভোগ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। যাতে চাপে পড়েছে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।

সুদের হার যে কয়টি দেশ বাড়ায়নি, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশও। এখানে ঋণের সুদের সর্বোচ্চ হার শতাংশই রেখে দেওয়া হয়েছে। আর এই সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির জনগোষ্ঠী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি, দামি ফ্ল্যাট, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন বিলাসপণ্য কিনছেন। ঋণের সুদ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও দেদার ব্যাংকঋণ নিচ্ছেন। ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ যাচ্ছে, আমানত আসছে তার চেয়ে কম। ফলে দেশে মূলত মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যাচ্ছে। অবস্থায় অর্থনীতিবিদেরা সুদের হারের সীমা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের গত সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ঋণের সুদহারের সীমা এখনই তুলে দিলে ঋণগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আরও বেশি চাপে পড়ে যেতে পারেন। এটি তাঁদের উৎপাদন ব্যয় আরও বাড়িয়ে দেবে এবং যা ব্যবসার ব্যয়কে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও ইতিমধ্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা বিলাসপণ্য উৎপাদন আমদানি, ক্ষুদ্র মাঝারি ঋণ এবং গাড়ি, বাড়ি, ব্যক্তিগতসহ বিভিন্ন ভোক্তাঋণে শতাংশ সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।

মূলত ব্যাংক চেয়ারম্যানদের উদ্যোগ সরকারি সিদ্ধান্তে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংকঋণের সুদ সর্বোচ্চ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে মেয়াদি আমানতের সুদহার বেঁধে দেওয়া হয়। তবে মূল্যস্ফীতি সাড়ে শতাংশ হলেও ব্যাংকের মেয়াদি আমানতের সুদহার শতাংশ রয়ে গেছে। ফলে মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রেখে যা পাচ্ছে, তাতে বেড়ে যাওয়া খরচও মিটছে না।