ডলারে বাড়তি মুনাফা..

ডলারের বাজার অস্থিতিশীল করে অতিরিক্ত মুনাফা করায় দেশি-বিদেশি ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রেজারি বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের টাকা ও ডলারের দৈনন্দিন জোগান ও চাহিদার বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। যেসব ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ওই বিভাগের প্রধান হিসেবে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদের কর্মকর্তাও রয়েছেন।

সম্প্রতি ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো পরিদর্শনে গিয়ে ডলার কেনাবেচার তথ্য পর্যালোচনা করে। তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেখতে পায়, ৬ ব্যাংকের কোনো কোনোটি ডলার কেনাবেচা করে গত মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে। যার মাধ্যমে ডলার বাজারকে আরও অস্থিতিশীল করে তোলা হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

নিকট অতীতে একসঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের ছয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ছয় কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে ২০০২ সালে ওম প্রকাশ আগরওয়াল নামের এক ব্যবসায়ী জালিয়াতির মাধ্যমে ৫টি ব্যাংক থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ওই ঘটনায় একসঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) অপসারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

আমদানি খরচ বাড়ায় গত মে মাস থেকে দেশে ডলারের সংকট চলছে। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে আমদানি দায় শোধ করা যাচ্ছে না। এর ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম গত তিন মাসে আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ৮৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে ওই দামে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকই ডলার বিক্রি করছে। অন্যান্য ব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে আরও বেশি দামে। বিভিন্ন ব্যাংক প্রবাসী আয় আনছে ১১২-১১৩ টাকায়। আর রপ্তানি বিল নগদায়ন হচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকায়। ফলে আমদানিকারকদের ঋণপত্র নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম রাখা হচ্ছে ১০৭-১০৮ টাকা। এদিকে খোলাবাজারে সোমবার প্রতি ডলারের দাম উঠেছে ১১৫ টাকায়। এদিন আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের দাম আরও ৩০ পয়সা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে ওই দাম বেড়ে হয়েছে ৯৫ টাকা।